Thursday, August 2, 2018

মাসিকের কত দিন আগে বা পরে কনডম ছাড়া মিলন করা যায়?


অতিরিক্ত জনসংখ্যা যে পৃথিবীর সবথেকে বড় সমস্যা সেটা বোঝার এখন সময় এসেছে। একটু ভুল বললাম, তাই না? সময় ৫০ বছর আগেই এসে চলে গেছে! জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামী ২০৫০ নাগাদ খাদ্য, জল, বাসস্থানের সমস্যা অবস্যম্ভাবি।

এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানোর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত গর্ভনিরোধ পদ্ধতি। আধুনিক বিজ্ঞানের দৌলতে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, তার মধ্যে থেকে নিজের পছন্দমত বেছে নিয়ে নিশ্চিন্তে যৌনসুখ অনুভব করুন ও ধরিত্রীর বোঝা কমাতে একটু সহযোগিতা করুন। এই পোস্টে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পন্থা সম্মন্ধে আলোচনা করা হল।

১) কন্ডোম –

জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার সবথেকে সহজ, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য উপায় হল কন্ডোম বা নিরোধ ব্যবহার। কন্ডোম পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যেই পাওয়া যায়। তবে পুরুষ কন্ডোম ব্যবহার অপেক্ষাকৃত সহজ। সঠিক উপায় কন্ডোম ব্যবহার করলে পুরুষ কন্ডোমের সফলতার হার প্রায় ৯৮%।

পুরুষ কন্ডোম উত্তেজিত লিঙ্গে পড়ানো হয় এবং মহিলা কন্ডোম সঙ্গমের পূর্বে যোনির মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। কন্ডোম ব্যবহার করলে বীর্য ওর মধ্যে আটকে যায় এবং সরাসরি যোনির সংস্পর্শে আসেনা। ফলে গর্ভসঞ্চার হয় না। কন্ডোম সাধারণত ল্যাটেক্স, পলিইউরেথিন বা নাইট্রাইল নামের পদার্থ দিয়ে তৈরি।

পুরুষ কন্ডোমের বাইরের গায়ে লুব্রিকেশন লাগানো থাকে। প্রয়োজন হলে আলাদাভাবেও অতিরিক্ত লুব্রিকেন্ট কন্ডোমে লাগানো যায়। তবে উল্লেখ্য যে ল্যাটেক্স কন্ডোম ব্যবহারের সময় তেল বা তেল দিয়ে তৈরি লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা উচিৎ নয়, কারণ ল্যাটেক্স তেলে দ্রবিভূত হয়ে সঙ্গমের সময় কন্ডোম ছিড়ে যেতে পারে। তার বদলে জল দিয়ে তৈরি বিশেষ লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা উচিৎ।

কন্ডোম সম্পর্কে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল যে একসাথে একটির বেশি কন্ডোম ব্যবহার করা উচিৎ নয়। তাতে কন্ডোম ছিড়ে যাবার বা খুলে যাবার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। একথা এজন্যে বললাম কারণ দেখা গেছে অনেক ব্যক্তি বেশি সুরক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে একসাথে দুটি কন্ডোম পড়ে নেয়। উল্লেখযোগ্য যে অন্যান্য সমস্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির তুলনায় কন্ডোমের
একটি বিশেষ সুবিধে হল যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও কন্ডোম ব্যবাহার করলে যৌনরোগের হাত থেকেও বাঁচা যায়।

২) পিরিওডের নিরাপদ সময় – 

পিরিওডের রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার দিন থেকে প্রথম সাত দিন ও শেষ সাত দিন যৌনসঙ্গম করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম থাকে। তাই ওই সময়কে যৌনসঙ্গমের নিরাপদ সময় হিসেবে ধরা হয়।

তবে এই শর্ত কেবল সেইসকল নারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যাদের পিরিওড নিয়মিত ২৮ দিন (বা নিয়মিত ২৬ থেকে ৩১ দিন) অন্তর অন্তর হয়। এদের ক্ষেত্রে রজস্রাব শুরু হওয়ার দিনকে প্রথম দিন ধরে গুণতে থাকলে মোটামুটি ১২ থেকে ১৯ তম দিনে ডিম্বাণু নির্গমণ হয়। ডিম্বাণু ওভিউলেশনের পর প্রায় ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা জীবিত থাকে এবং স্ত্রী জননতন্ত্রে বীর্যস্খলনের পর শুক্রাণু ৩ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে।

তাই পিরিওডের সপ্তম থেকে ২১ তম দিন পর্যন্ত সঙ্গম করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি। পিরিওডের বাকি দিনগুলো, প্রথম থেকে সপ্তম ও ২১ তম দিন থেকে পুনরায় রজস্রাব শুরু হওয়ার দিন পর্যন্ত যৌনসঙ্গমের নিরাপদ সময় হিসেবে গন্য করা হয়। মনে রাখবেন যে রক্তক্ষরণ শুরু হবার দিনকে প্রথম দিন ধরেই কিন্তু উপরোক্ত হিসেব দেওয়া হয়েছে।

এসম্মন্ধে বিশদে জানতে পিরিওড সংক্রান্ত এই পোস্ট দেখুন। তবে উল্লেখযোগ্য যে পিরিওডের কোন দিনই প্রকৃত নিরাপদ দিন নয়। উপরিউল্লিখিত নিরাপদ সময়ে সেক্স করলেও গর্ভধারণের স্বল্প হলেও কিছুটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। কাজেই অপর কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপায়, যেমন কন্ডোম বা পিল ব্যবহার করাই শ্রেয়। কারণ যাদের পিরিওড অনিয়মিত বা ২৮ দিনের থেকে অনেক কম তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু উপরোক্ত হিসেব প্রযোজ্য নয়।

উপরন্তু যৌনরোগের সম্ভাবনা সব সময়েই থাকে। তাই ক্যাসুয়াল সেক্স বা বিবাহবহিঃর্ভুত সেক্স করার সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার এই পদ্ধতির উপর কখওনই নির্ভর করা উচিৎ নয়। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র সেইসকল দম্পতিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যারা হয়তো এখওনই বাচ্চা-কাচ্চা চান না, কিন্তু নেহাৎ হয়ে গেলেও কোন অসুবিধা নেই) গর্ভনিরোধোক বড়ি – মহিলাদের ব্যবহারযোগ্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার একটি উপায় হল গর্ভনিরোধোক বড়ি।

এগুলো মূলত ইস্ট্রোজেন-প্রজেস্টেরন হরমোনের বড়ি। ওইসব বড়ি খেলে ওভিউলেশন বা ডিম্বাণু নির্গমন হয় না। ফলে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনাও থাকে না। দুধরনের বড়ি পাওয়া যায় – একটিতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন দুটোই থাকে এবং অপরটিতে শুধু প্রোজেস্টেরন থাকে।

দুটোই গর্ভসঞ্চার রোধে সমান কার্যকরী, কিন্তু প্রথম বড়িটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেমন স্তন্যদায়ী মহিলা এবং এমন মহিলা যাদের রক্তবাহে রক্ত তঞ্চনের সম্ভাবনা বেশি, ইত্যাদি। উভয় বড়িই পিরিওডের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং ব্যাথা বা কমায়।

গর্ভনিরোধোক বড়ি নিয়মিত খেতে হয়। যেসকল বড়িতে কেবল প্রোজেস্টেরন থাকে তাদের প্রত্যহ একটি নির্দিষ্ট সময়ে খেতে হয়। তবে গর্ভনিরিধোক বড়ি খেতে শুরু করার পর প্রথম সপ্তাহে তার সাথে অন্য কোন কার্যকরী গর্ভনিরোধ (জন্ম নিয়ন্ত্রণের) পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিৎ। কারণ ওই সকল বড়ির প্রভাব কার্যকরী হতে কিছুটা সময় লেগে যায়। উল্লেখ্য যে গর্ভনিরোধোক বড়ি খাওয়া শুরু করার পূর্বে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।

Related Posts:

  • ভারতেও সেরা অভিনেত্রী জয়া আহসান ভারতে এ বছরের সেরা বাঙালি নারী অভিনেত্রী জয়া আহসান।দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বেছে নিয়েছে জয়াকে। কলকাতায় মুক্তি পাওয়া বাংলা চল… Read More
  • মালিবাগে বাসচাপায় প্রাণ হারালেন দুই তরুণী রাজধানীর মালিবাগে বাসচাপায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই তরুণী। এ ঘটনায় বাসসহ চালককে আটক করেছে পুলিশ। দুই তরুণীর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখ… Read More
  • ভোট বর্জনের ঘোষণা হিরো আলমের দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভোট বর্জন করলেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম। হিরো… Read More
  • ‘এত বই পৃথিবীর কোনো দেশ ছাপায় না’ সকালের নরম রোদ ধীরে ধীরে তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশাল মাঠে পাখিদের মতো কিচিরমিচির করছে অসংখ্য প্রাথমিক-পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে ৷ সঙ্গে আছেন বাবা-মা অথবা বড় ভাই-ব… Read More
  • নবনির্বাচিতদের শপথ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীরা সাংসদ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) শপথ নেবেন। আজ মঙ্গলবার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ ক… Read More