Sunday, November 25, 2018

রাজশাহী নগরীর সর্বশেষ সিনেমা হলটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে


কিছুদিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল রাজশাহী নগরীর সর্বশেষ উপহার সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে যাবে। সেই অনুযায়ী অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। এরপরও ব্যক্তিমালিকাধীন ‘উপহার’ সিনেমা হলটি রক্ষা করা যায়নি। গত ৪ নভেম্বর থেকে হলটি ভবন ভাঙা শুরু হয়েছে। এখনও চলছে ভেঙে ফেলার কাজ। উপহার সিনেমা হলে সর্বশেষ প্রদর্শিত হয়েছে শাকিব খান, নুসরাত, সায়ন্তিকা অভিনীত ‘নাকাব’ ছবিটি।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) উপহার সিনেমা হলের ভবনের পিছন অংশটি প্রায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর সামনে একটি বিশাল ব্যানার টানানো হয়েছে। তাতে লেখা আছে ‘প্রস্তাবিত উপহার কমপ্লেক্স-সিনেপ্লেক্স ও বিশাল ফাস্টফুড, বিবিধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, হেলথ কেয়ার ও ডে কেয়ার, বিনোদন কেন্দ্র ও গেম সেন্টার, আধুনিক ব্যায়ামাগার ও ডিপার্টমেন্টার স্টোর, সুইমিংপুল ও অত্যাধুনিক আবাসিক ফ্লাট, কর্তৃপক্ষ : উপহার সিনেমা লিমিটেড।

জানা যায়, প্রথম দিকে এই হলের নাম ছিল স্নিগ্ধা। পরে ৯০ দশকে উপহার সিনেমা লিমিটেড নামে নতুন করে পথ চলা শুরু করে। তখন টিকিটের মূল্য ছিল ডিসি সাড়ে ৪ টাকা, প্রথম শ্রেণি সাড়ে ৩ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণি আড়াই টাকা ও তৃতীয় শ্রেণি ছিল ১টাকা ৫০ পয়সা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ বকুল বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামের ফলে কর্তৃপক্ষ তাদের নকশা বদল করে সিনেপ্লেক্স করার পরিকল্পনা রেখেছে। কিন্তু সিনেপ্লেক্সের টিকিটের মূল্য তো বেশি হবে। আর রাজশাহীতে বেশির ভাগই শিক্ষার্থীর বসবাস। তাই তাদের জন্য একটু কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। আবার হলটি ভেঙে ফেলায় নির্মল বিনোদনের জায়গা নষ্ট হয়ে যাবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী আফরিন বানু বলেন, ‘‘রাজশাহীতে পড়তে এসে বন্ধুদের সাথে এই হলে ‘বস-২’ সিনেমা দেখেছিলাম। হলটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এতে করে বন্ধুদের সাথে এভাবে সিনেমা দেখা হবে না। যদি সিনেপ্লেক্স হয়, তাহলে টিকিটের দামটা যেন সহনীয় হয়।


রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী উপহার সিনেমা হলটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে। ১৯৯১ সালের সরকারি হিসাব অনুযায়ী রাজশাহী নগরীসহ জেলায় সিনেমা হল ছিল ৫৫টি। তবে জেলায় বর্তমানে চালু আছে মাত্র চারটি সিনেমা হল। এগুলো হলো- পবার নওহাটার বাবুল, মোহনপুর কেশরহাটের দিগান্ত, তানোরের আনন্দ ও বাগমারার মাদারিগঞ্জে অন্তরা।