Tuesday, January 1, 2019

সেলফোন অপারেটর : তরঙ্গ ফি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় আসছে পরিবর্তন


সেলফোন অপারেটরদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফোরজি সেবার লাইসেন্স দেয়া হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। একই সঙ্গে টুজি তরঙ্গের লাইসেন্সের আওতায় দেয়া হয় প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার সুযোগও। ফলে তরঙ্গের বার্ষিক ফি নির্ধারণের বিদ্যমান প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

এজন্য সেলফোন অপারেটরদের বরাদ্দ দেয়া তরঙ্গের বার্ষিক ফি নির্ধারণের ফর্মুলা পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে বার্ষিক তরঙ্গ ফি পরিশোধের ফর্মুলা পর্যালোচনায় নয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মূলত সরকারের রাজস্ব আয় অক্ষুণ্ন রেখে তরঙ্গের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এ ফর্মুলা পর্যালোচনার জন্যই কমিটিটি গঠন করা হয়েছে।

জানা গেছে, বরাদ্দকৃত তরঙ্গের জন্য নির্ধারিত হারে বার্ষিক ফি পরিশোধ করতে হয় সেলফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এ বার্ষিক ফি হিসাব করা হয় সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সিং নীতিমালার শর্তের ভিত্তিতে। এ হিসাবের ক্ষেত্রে আবার অন্যতম মানদণ্ড হলো সংশ্লিষ্ট অপারেটরের সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সের আওতায় নির্ধারিত সময়ের ৯০ দিনের মধ্যে সেবাগ্রহীতাদের সক্রিয় গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী টুজি, থ্রিজি ও ফোরজির মধ্যে যেকোনো দুটির অথবা সবগুলোর সেবাগ্রহীতাদের একক গ্রাহক হিসেবে গণনা করা হয়।

এ নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিন সময়ের মধ্যে কোনো গ্রাহক টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি সেবা ব্যবহার করলে তাকে শুধু ফোরজির সক্রিয় গ্রাহক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

এছাড়া বার্ষিক তরঙ্গ ফি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে লাইসেন্সে নির্দিষ্ট তরঙ্গ ব্যান্ড ও প্রযুক্তিতে ব্যান্ডউইডথের ব্যবহারও হিসাব করা হয়। তবে তরঙ্গের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেয়ায় সব তরঙ্গেই এখন সব ধরনের প্রযুক্তির সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট লাইসেন্সের আওতায় ব্যান্ডউইডথের হিসাব নির্ণয় নিয়েও দেখা দিয়েছে জটিলতা।

এ বিষয়ে বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দেশে ফোরজি প্রযুক্তির সেবাদানের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেয়া হয়েছে টুজি তরঙ্গের। এগুলোর ক্ষেত্রে তরঙ্গের বার্ষিক ফি নির্ধারণের নির্দেশনা নেই। এজন্যই বার্ষিক তরঙ্গ ফি পরিশোধের বিদ্যমান ফর্মুলা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। পর্যালোচনার পর প্রয়োজন হলে এটি সংশোধন করা হবে।

উল্লেখ্য, দেশে জিএসএম প্রযুক্তির সেলফোন সেবা চালু হয় ১৯৯৭ সালে। দেশে ডাটাভিত্তিক সেবা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে থ্রিজি প্রযুক্তি চালু হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। অন্যদিকে ফোরজির লাইসেন্স দেয়া হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। দেশে সেলফোন অপারেটরদের টুজি সেবার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড থেকে।

অন্যদিকে থ্রিজি সেবার জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয় ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড থেকে। সেলফোন অপারেটরদের থ্রিজি ও ফোরজি লাইসেন্সের আওতায় বরাদ্দ দেয়া সব তরঙ্গই প্রযুক্তি নিরপেক্ষ। এছাড়া টুজি লাইসেন্সের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেয়া হয় গত বছর।